ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত। আমরা অনেকেই ঈদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম জানিনা। আশেপাশের মুসুল্লীরা যা করে আমরাও দেখে দেখে তাই করি। এতে একে তো তাকবীর..
ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম। আমরা অনেকেই ঈদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম জানিনা। আশেপাশের মুসুল্লীরা যা করে আমরাও দেখে দেখে তাই করি। এতে একে তো তাকবীর দিতে ভুল হয়, আবার নামাজে অমনোযোগ সৃষ্টি হয়। আপনার সুবিধার্থে ঈদের নামাজের নিয়ম সমূহ এই পোস্ট তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। যাতে আপনি ঈদের আগেই নিয়মগুলো শিখে নিতে পারেন।

ঈদের নামাজ এর নিয়ম নিচে দেয়া হলো। চলুন দেখে নেই, কিভাবে ঈদের নামায পড়তে হয়। এই নিবন্ধটিতে ছয় তাকবিরের সাথে ঈদের সালাত আদায়ের উপায় বর্ণনা করা হয়েছে।

ঈদ-উল-ফিতরের নামাজ আদায় করার পূর্বেই সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা আদায় করতে হয়। দেখে নিন, ২০২২ সালের ফিতরার হার কত টাকা। এছাড়াও সকাল সকাল গোসল করে, সুগন্ধি মেখে, নতুন বা পরিষ্কার জামা পরিধান করে, বিজোড় সংখ্যক খেজুর খেয়ে, ঈদের তাকবীর পড়তে পড়তে পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যেতে হয়।

ঈদের নামাজ কি?

ঈদ সালাহ হল একটি বিশেষ প্রার্থনা যা ঈদ-উল-ফিতরের দিনে রমজানের শেষ এবং ঈদ উল-আযহার দিনে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আত্মত্যাগের স্মরণে আদায় করা হয়। সারা বিশ্বের মুসলমানরা বছরে দুবার এই সালাত আদায় করে এবং পদ্ধতিটি প্রতিদিনের নামাজ থেকে আলাদা। এটি দুই রাকাত নামাজ। এই নামায মসজিদে না হয়ে বড় মাঠের মত খোলা জায়গায় পড়া সুন্নাতের অংশ।

সকল পুরুষ মুসলমানদেরকে ঈদের সালাহ পালন করতে হবে, এবং নারী মুসলমানদেরকে উপস্থিত হতে উৎসাহিত করা হয়, যদিও তাদের অবশ্যই হিজাব এবং অন্যান্য মসজিদের অধ্যাদেশগুলি পালন করতে হবে।

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

বছরে মাত্র দুইবার ঈদের নামায আদায় করা হয়, ফলে আমরা অনেকেই ঈদের নামাজের নিয়মগুলো গুলিয়ে ফেলি। অনেকেই কখন হাত বাঁধবেন, কখন হাত ছেড়ে দেবেন এটা নিয়ে খুব চিন্তিত থাকেন, এমনকি অনেকে একবার ডানপাশের লোকেরটা অনুসরণ করেন, আরেকবার বামপাশের লোকেরটা অনুসরণ করেন। অথচ বিষয়টা খুবই সহজ। বিস্তারিত দেখে নিন।

ঈদের নামাযের নিয়ত

নামাজের নিয়ত আরবিতে করা জরুরি নয়। নিয়ত আরবিতে করতে হবে এমন কোন নিয়ম নাই। যেকোনো ভাষাতেই নামাজের নিয়ত করা যায়। নিয়ত মনে মনে করাই যথেষ্ট। ঈদের দিন ইমামের পেছনে কিবলামুখী দাঁড়িয়ে মনে এই নিয়ত করবেন—

ঈদের নামাযের বাংলা নিয়ত: "আমি ঈদুল ফিতরের/ঈদুল আযহার দু রাকাত ওয়াজিব নামায ছয় তাকবিরের সাহিত এই ইমামের পিছনে কিবলামুখি হয়ে আদায় করছি, আল্লাহু আকবার।"

ঈদের নামাজের আরবিতে নিয়ত: "নাওয়াইতু আন উছাল্লিয়া লিল্লাহি তাআ'লা রাকয়া তাই ছালাতি ঈদুল ফিত্রি/ঈদিল আদ্বহা মায়া ছিত্তাতি তাকবীরাতি ওয়াজিবুল্লাহি তা আলা ইক্বতাদাইতু বিহাজাল ইমামি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা'বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।"


ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজ দুই রাকাত। ঈদের নামাজ মসজিদে, খোলা জায়গায় কিংবা বাসা-বাড়িতে যেখানেই পড়া হোক না কেন, অবশ্যই তা জামাআতের সঙ্গে পড়তে হবে। জুমআ নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য যে শর্ত প্রযোজ্য, ঈদের নামাজ আদায় করার জন্যও সে একই শর্ত প্রযোজ্য।

প্রথম রাকাতে ছানা পড়ার পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দিতে হয়। আল্লাহু আকবার বলে হাত বেঁধে নামাযে দাঁড়ানোর পর, আপনাকে শুধু ছানা পড়তে হবে। ছানা পড়ার পর ইমাম সাহেব ৩টি অতিরিক্ত তাকবীর দিবেন। প্রথম ২টিতে হাত উঠিয়ে আবার ছেড়ে দিবেন এবং ৩য় তাকবীরের সময় হাত বাঁধবেন।

দ্বিতীয় রাকাতে কেরাত পড়ার পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দিতে হয়। এখানেও প্রতি তাকবীরের পর হাত ছেড়ে দিবেন অর্থাৎ হাত বাঁধতে হবেনা। এইবার ৩য় তাকবীর শেষ হলে চতুর্থবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত না বেঁধে রুকুতে চলে যান এবং স্বাভাবিকভাবে নামাজ শেষ করুন।

প্রত্যেক নামাযের শুরুতে আমরা যে, আল্লাহু আকবার বলে তাকবির দেই, একে তাকবিরে তাহরিমা বা প্রধান তাকবির বলা হয়। যে তাকবীর দ্বারা নামাজ শুরু হয় তাকে তাকবীরে তাহরিমা বলে। সকল নামাযে এই তাকবির দেওয়া ফরয। ঈদের নামাযে এই তাকবিরে তাহরিমা এবং অন্যান্য সাধারণ তাকবিরের সাথে অতিরিক্ত ৬টি তাকবির দিতে হয়।

মানে, ঈদের সালাতের দুই রাকাতে অতিরিক্ত ৬টি তাকবির দিতে হয়। এর মধ্যে-
  • প্রথম রাকাতে ছানা পড়ার পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির,
  • দ্বিতীয় রাকাতে রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত ৩ তাকবির।

প্রথম রাকাতে করণীয়: তাকবিরে তাহরিমা আল্লাহু আকবার বলে আপনি ছানা পড়বেন, ছানা পড়ে কেরাত পড়ার আগে অতিরিক্ত ৩টি তাকবীর দিবেন। এই অতিরিক্ত ৩টি তাকবীরের প্রথম ২টিতে হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আবার ছেড়ে দিবেন। এবার ৩য় তাকবীরের সময় কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে আবার হাত বাঁধবেন। এরপর রুকু করবেন, সিজদা করবেন। এভাবে প্রথম রাকাত সম্পন্ন হবে।

  • (১ম তাকবির) তাকবিরে তাহরিমা হাত বাঁধা,
  • (২য় তাকবির) হাত ছেড়ে দিবেন,
  • (৩য় তাকবির) হাত ছেড়ে দিবেন,
  • (৪র্থ তাকবির) হাত বাঁধবেন।

সংক্ষেপে, ঈমাম সাহেব তাকবিরে তাহরিমা বলে হাত বাঁধবেন, এরপর ছানা পাঠ করে অতিরিক্ত ৩টি তাকবীর দিবেন। প্রথম দুইটি তাকবীরে হাত ছেড়ে দিয়ে, ৩য় তাকবীরে হাত বাঁধবেন। এরপর সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা মিলিয়ে কেরাত পড়বেন, তারপর রুকু-সিজদায় গিয়ে প্রথম রাকাত শেষ করে ২য় রাকাতের জন্য হাত বেঁধে দাঁড়াবেন।

দ্বিতীয় রাকাতে করণীয়: দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে কেরাত পড়ার পরে অতিরিক্ত তিনটি তাকবীর দিবেন। এই অতিরিক্ত ৩টি তাকবীরেই হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আবার ছেড়ে দিবেন। এবার হাত না উঠিয়ে ৪র্থ তাকবীর দিয়ে আপনি সরাসরি রুকুতে যাবেন। তারপর, সিজদা করবেন, পরে স্বাভাবিক নামাজের মতোই বৈঠক শেষ করে নামাজ শেষ করবেন।

  • (২য় রাকাত শুরু) ঈমাম সাহেব কেরাত পড়বেন (সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা মিলাবেন),
  • (১ম তাকবির) হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আবার ছেড়ে দিবেন,
  • (২য় তাকবির) হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আবার ছেড়ে দিবেন,
  • (৩য় তাকবির) হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে আবার ছেড়ে দিবেন,
  • (৪র্থ তাকবির) তারপর হাত না উঠিয়ে চতুর্থ তাকবির বলে রুকুতে যাবেন।

সার সংক্ষেপ: প্রতি রাকাতের শুরুতেই প্রথমে হাত বাঁধা থাকবে। তারপর প্রথম রাকাতে দুইবার হাত ছেড়ে দেয়ার পর হাত বাঁধতে হয় আর ২য় রাকাতে তিনবার হাত ছেড়ে দেয়ার পর ৪র্থ তাকবিরে রুকু করতে হয়।

একনজরে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজের প্রথম রাকাআত

তাকবিরে তাহরিমা (দু হাত কান পর্যন্ত তুলে "আল্লাহু আকবার") বলে হাত বেঁধে ছেড়ে না দিয়ে ছানা (সুবাহানাকা আল্লাহুমা ওয়া বিহামদিকা ওয়াতাবারা কাসমুকা ওয়া তায়ালাজাদ্দুকা ওয়া লা-ইলাহা গাইরুকা।) পড়বেন। এরপর দু হাত কান পর্যন্ত তুলে "আল্লাহু আকবার" বলে হাত ছেড়ে দেবেন। তারপর আবার দু হাত কান পর্যন্ত তুলে "আল্লাহু আকবার" বলে হাত ছেড়ে দেবেন। তারপর তৃতীয়বার দু হাত কান পর্যন্ত তুলে "আল্লাহু আকবার" বলে হাত বেঁধে নেবেন। অতিরিক্ত এই তিনটি তাকবিরের মাঝে তিন তাসবিহ তথা তিনবার "সুবহানাল্লাহ" বলা যায় এই পরিমান সময় অপেক্ষা করা মুস্তাহাব। তারপর আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ার পর ইমাম সাহেব সুরা ফাতিহা পড়ে এর সঙ্গে অন্য একটি সুরা পড়বেন তার সঙ্গে মিলাবেন। তারপর স্বাভাবিক নামাজের মতোই রুকু সিজদা করে প্রথম রাকাত শেষ করবেন।

ঈদের নামাজের দ্বিতীয় রাকাআত

এরপর দ্বিতীয় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে বিসমিল্লাহ সহ ইমাম সাহেব কিরাত পড়বেন “আলহামদু ও অন্য একটি সুরা পড়বে । কিরাত শেষ করে এরপর তিন বার কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত ছেড়ে দেবেন। তারপর হাত না উঠিয়ে চতুর্থ তাকবির বলে রুকুতে যাবেন এই ভাবে ঈদের নামায পড়তে হবে। পরে স্বাভাবিক নামাজের মতোই নামাজ শেষ করবেন।

ঈদের খুতবা পাঠ

নামাজ শেষে ইমাম মিম্বারে উঠবেন। পরপর ২ খুতবা পাঠ করবেন এবং মাঝখানে তিন আয়াত পড়া যায় এতটুকু সময় পরিমান বসবেন, এই বসা সুন্নাত। এ সময় ইমামের খুতবা মনোযোগসহকারে শুনতে হবে।

ঈদের নামাজ শেষে ইমাম সাহেব খুতবা পাঠ করবেন। জুমার খুতবার মতো এই খুতবা শোনা মুসল্লিদের জন্য ওয়াজিব। খুতবার সময় কথাবার্তা বলা,চলাফেলা করা, নামাজপড়া সম্পূর্ণরূপে হারাম। কারও ঈদের নামাজ ছুটে গেলে কিংবা যে কোনো কারণে নামাজ নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় একাকী তা আদায় বা কাজা করার কোনো সুযোগ নেই। তবে চার বা তার অধিক লোকের ঈদের নামাজ ছুটে গেলে তাদের জন্য ঈদের নামাজ পড়ে নেয়া ওয়াজিব।

জুমআ'র নামাজের খুতবার মতো দুই ঈদের খুতবা শোনাও ওয়াজিব। খুতবা চলাকালীন সময় কথা বলা ঠিক না। তখন, চুপ থেকে খুতবা শুনতে হয়।


ঈদের দিনের সুন্নত সমূহ

ঈদের দিনের সুন্নত পর্যায়ের করণীয় কিছু বিষয় হলো। আরও দেখুন: ঈদ উদযাপনের সুন্নাহ সম্মত পদ্ধতি

ঈদের দিনের সুন্নত সমূহ
  • ১) শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে যথাসাধ্য সুসজ্জিত হওয়া (এবং খুশী প্রকাশ করা),
  • (২) গোসল করা,
  • (৩) মিসওয়াক করা,
  • (৪) যথাসম্ভব উত্তম কাপড় পরা,
  • (৫) খুশবু লাগানো,
  • (৬) সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠা,
  • (৭) ফজরের পর সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া,
  • (৮) ঈদগাহে এক রাস্তায় যাওয়া অন্য রাস্তায় আসা,
  • (৯) পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া,
  • (১০) যাবার সময় উচ্চস্বরে ঈদুল আযহার তাকবীর বলতে বলতে যাওয়া।

তাকবীর টি হল: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার; লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার, ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।

ঈদুল ফিতরের ও ঈদুল আযহার নামাজের পার্থক্য

ঈদুল আযহার নামাযের নিয়ম ঠিক ঈদুল ফিতরের নামাযেরই অনুরূপ এবং যেসব কাজ ওখানে সুন্নত সেসব এখানেও সুন্নত। পার্থক্য শুধু এই যে,

  • নিয়তের মধ্যে ঈদুল ফিতরের পরিবর্তে ঈদুল আযহা বলবে।
  • ঈদুল ফিতরের দিন কিছু খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নত কিন্তু ঈদুল আযহার দিনে খেয়ে যাওয়া সুন্নত নয় (বরং ঈদুল আযহার নামাযের পূর্বে কিছু না খেয়ে যাওয়াই মুস্তাহাব)।
  • ঈদুল আযহার দিনে ঈদগাহে যাওয়ার সময় উচ্চস্বরে তাকবীর পড়া সুন্নত। ঈদুল ফিতরে আস্তে পড়া সুন্নত।
  • ঈদুল আযহার নামায ঈদুল ফিতর অপেক্ষা অধিক সকালে পড়া সুন্নত।
  • ঈদুল ফিতরে নামাযের পূর্বে সদকায়ে ফিতরা দেয়ার হুকুম, ঈদুল আযহার নামাযের পর সক্ষম ব্যক্তির জন্য কুরবানী করার হুকুম।

ঈদের তাকবীরে তাশরিক

ঈদগাহে যাওয়ার দোয়া: মহান আল্লাহ তাআলার জিকির তথা তাঁর বড়ত্ব প্রকাশ করা, তাঁর একত্ববাদের স্বীকৃতি ও প্রশংসার ঘোষণাই হলো তাকবিরে তাশরিকের মূল কথা।

ঈদগাহে যাওয়ার দোয়া, ঈদের তাকবীর

اَللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَر لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَاللهُ اَكْبَر اَللهُ اَكْبَروَلِلهِ الْحَمْد

উচ্চারণ: ‘আল্লাহু আকবর, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবর ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’

অর্থ: ‘আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান; আল্লাহ মহান, আল্লাহ ব্যতিত কোনো উপাস্য নেই; সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আল্লাহ মহান।’

ঈদুল ফিতরের তাকবীর

ঈদুল ফিতরের সময়, শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে ঈদগাহে যাওয়ার আগ পর্যন্ত এই তাকবীর পাঠ করতে করতে ঈদগাহে যেতে হয়।

ঈদুল আজহার তাকবীর

কোরবানীর ঈদ বা ঈদুল আযহার সময়, জিলহজ্ব মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাজ থেকে ১৩ তারিখ আসরের নামাজ পর্যন্ত, প্রত্যেক ওয়াক্ত ফরয নামাজের পর তাকবীরে তাশরীক, পুরুষদের জন্য জোরে বলা এবং মহিলাদের জন্য আস্তে বলা ওয়াজিব।

কোরবানীর ঈদের তাকবীর বা ঈদুল আযহার তাকবীর

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম

ঈদের নামাজ মসজিদে, খোলা জায়গায় কিংবা বাসা-বাড়িতে যেখানেই পড়া হোক না কেন, অবশ্যই তা জামাআতের সঙ্গে পড়তে হবে। জুমআ নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য যে শর্ত প্রযোজ্য, ঈদের নামাজ আদায় করার জন্যও সে একই শর্ত প্রযোজ্য।

ঈদের নামাজ

ঈদের নামাজের জন্য কোনো আজান ও ইকামত নেই। তবে জুমআর নামাজের মতোই উচ্চ আওয়াজে কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়।

ঈদের নামাজের পার্থক্য

তবে ঈদের নামাজের জন্য পার্থক্য হলো অতিরিক্ত ৬টি তাকবির দিতে হবে। - প্রথম রাকাআতে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে হাত বেঁধে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে সুরা ফাতিহা পড়া। -দ্বিতীয় রাকাআতে সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত তিন তাকবির দিয়ে রুকতে যাওয়া।

নামাজের নিয়ত

ঈদের দুই রাকাআত ওয়াজিব নামাজ অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের সঙ্গে এই ইমামের পেছনে কেবলামুখী হয়ে আল্লাহর জন্য আদায় করছি... আল্লাহু আকবার।

প্রথম রাকাআত

- তাকবিরে তাহরিমা : ঈদের নামাজে নিয়ত করে তাকবিরে তাহরিমা 'আল্লাহু আকবার' বলে হাত বাঁধা। - ছানা পড়া : 'সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়াতাআলা যাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গাইরুকা। - অতিরক্তি ৩ তাকবির দেয়া। এক তাকবির থেকে আরেক তাকবিরের মধ্যে তিন তাসবিহ পরিমাণ সময় বিরত থাকা। প্রথম ও দ্বিতীয় তাকবিরে উভয় হাত উঠিয়ে তা ছেড়ে দেয়া এবং তৃতীয় তাকবির দিয়ে উভয় হাত বেধেঁ নেয়া। - আউজুবিল্লাহ-বিসমিল্লাহ পড়া - সুরা ফাতেহা পড়া - সুরা মিলানো। অতপর নিয়মিত নামাজের মতো রুকু ও সেজদার মাধ্যমে প্রথম রাকাআত শেষ করা।

দ্বিতীয় রাকাআত

- বিসমিল্লাহ পড়া - সুরা ফাতেহা পড়া - সুরা মিলানো। - সুরা মিলানোর পর অতিরিক্ত ৩ তাকবির দেয়া। প্রথম রাকাআতের মতো দুই তাকবিরে উভয় হাত কাধ বরাবর উঠিয়ে ছেড়ে দেয়া অতপর তৃতীয় তাকবির দিয়ে হাত বাঁধা। - তারপর রুকুর তাকবির দিয়ে রুকুতে যাওয়া। - সেজদা আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।

খুতবা

ঈদের নামাজ পড়ার পর ইমাম খুতবা দেবে আর মুসল্লিরা খুতবা মনোযোগের সঙ্গে শুনবে। অবশ্য অনেকেই খুতবা না দেয়ার ব্যাপারে শিথিলতার কথা বলেছেন। খুতবা না দিলেও ঈদের নামাজ আদায় হয়ে যাবে বলে মত দিয়েছেন। উল্লেখ্য, অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাজহাবসহ অনেকেই প্রথম রাকাআতে তাকবিরে তাহরিমাসহ ৭ তাকবির আর দ্বিতীয় রাকাআতে ৫ তাকবিরে দিয়ে থাকেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ নিয়মে ঈদের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। ঈদের নামাজ আদায়ে যথাযথ নিরাপত্তা বজায় রেখে সুস্থ থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।

ঈদের নামাজ সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর

ঈদের সালাত কখন পড়া হয়?

ঈদের সালাত ঈদের দিন সকাল বেলা পড়তে হয়।

ঈদের সালাত সুন্নত নাকি ওয়াজিব?

ঈদের সালাত হচ্ছে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।

ঈদের সালাত কত রাকাত?

ঈদের দুই রাকাত পড়তে হয়।

ঈদের সালাত আদায় করা কি?

ঈদের সালাত আদায় করা সুন্নাত। যেহেতু ঈদের সালাত হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আদায় করতেন সেহেতু ঈদের সালাত আদায় করা সুন্নাত।

ঈদের সালাতের জন্য আযান দেয়া হয়?

ঈদের সালাতের জন্য আযান দেয়া হয় না।

ঈদের জামাতের শর্ত কি?

ঈদের নামাজের জন্য জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ার শর্ত হলো- ইমাম ছাড়া ন্যূনতম তিনজন মুসল্লি হতে হবে। বিশেষ প্রয়োজনে বাসা-বাড়িতে পরিবার নিয়ে ঈদের নামাজের জামাত আদায় করা যাবে। **ঈদের নামাজ ঘরে পড়তে চাইলে কয়েক জন মিলে পড়তে হবে।

উল্লেখ্য, অতিরিক্ত তাকবিরের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাজহাবসহ অনেকেই প্রথম রাকাআতে তাকবিরে তাহরিমাসহ ৭ তাকবির আর দ্বিতীয় রাকাআতে ৫ তাকবিরে দিয়ে থাকেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথ নিয়মে ঈদের নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

পোস্টটি দেখে যদি আপনাদের সামান্য উপকার হয়ে থাকে অবশ্যই একটি লাইক দিবেন, কমেন্ট করে জানাবেন, এবং শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিবেন ইনশাআল্লাহ্।


Eid er Namaz Porar Niom

▬ 🔎 KeyWords ▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, প্রাক্টিকাল শিখুন ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম , ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম বাংলা, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম, ঈদের নামাজ কত তাকবীর, ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম মিজানুর রহমান আজহারী | ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম মিজানুর রহমান আজহারী, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম মিজানুর রহমান আজহারী, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, কিভাবে ঈদের নামাজ পড়বো, কেমনে ঈদের নামাজ পড়বো, ঈদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম, ঈদের নামাজ,ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম | ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম | ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম | ঈদের নামাজের নিয়ম

eder namaj porar niyom, Kivabe eider namaz porben | Eider namajer niom | Eider namaj porar niom Mizanur rahman azhari, Eider namajer niom | Eider namaj porar niom Mizanur rahman azhari, mizanur rahman azhari waz, eid, eider namaj kivabe porbo, eider namaj porar sotik niom eider namaj, eider namazer niyom, eider namajer niot, eider namazer niom bangla Eid er namaj, Eid Er Namaz Porar Niyom, Eider namaz | Eider namaj porar niom, Eider namaz, Eider namaj porar niom,

ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজের নিয়ম, ঈদের নামাজ, ঈদের নামাজের নিয়ত,ঘরে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, বাড়িতে ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজ কিভাবে পড়তে হয়, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজ বাড়িতে পড়ার নিয়ম, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম ও নিয়ত, ঈদের নামাজের নিয়ম, ঈদুল আযহার নামাজের নিয়ত ও নিয়ম, ঘরে ঈদের নামাজ, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম বাংলা, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম মহিলা, ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম মেয়েদের, ঈদের নামাজ পড়ার সঠিক নিয়ম, মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার নিয়ম, রোজার ঈদের নামাজের নিয়ত।

eid ul fitr namaz er niyom, Eid ul adha namaz er niyom, eid er namaz porar niom, eid er namaz porar niyom, eider namaz porar niom, mohilader eider namaz porar niom, eid er namaz porar niom bangla, eider namaj, eider namaj porar niom, eid er namaz, eider namazer niom, eid namaz porar niom, eider namaz, eider namajer niom, ghore eid er namaj, eid ul fiter er namaj, eid ul fitr namaz porar niom, eider namaz gore porar niom, kurbanir namaj porar niom, eid er namaz shikkha, eid er namaj er niom.

eid er namaj, eid er namaj porar niom , eid er namaj ki ,eid er namaj koy rakat, eid er namaz at home, eid er namaz time, eid er namaz er niyat, eid er namaz er takbir, eid er namajer niom, eid er salat adai er niyom, eid ul adha namaj, eid ul fitr er namajer niom. ঈদ উল ফিতর এর নামাজ, ঈদ উল ফিতর এর নামাজের নিয়ম, ঈদ এর নামাজ, ঈদ এর নামাজ পড়ার নিয়ম, ঈদুল আযহার এর নামাজ, ঈদুল ফিতর এর নামাজ, ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম, ঈদের ইতিহাস, ঈদের নামাজ এর গুরুত্ব, ঈদের নামাজ কয় রাকাত, ঈদের নামাজের খুতবার নিয়ম, ঈদের নামাজের নিয়ত, ঈদের নামাজের নিয়ত আরবিতে, ঈদের নামায পড়ার সঠিক নিয়ম, ঈদের সালাত, ঈদের সালাত আদায় করা কি ওয়াজিব, ঈদের সালাত আদায় করার নিয়ম, ধাপে ধাপে ঈদের এর নামাজ।

Post a Comment

Commenting rules:

Feel free to ask if you have any queries or doubts regarding this article. Don't try to spam. Our team reviews every comment before publishing